মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শৈশব ও কৈশোর শৈশবকাল। লেখক মোঃ ফিরোজ কবির।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শৈশব ও কৈশোর
লেখক মোঃ ফিরোজ কবির।
শৈশবকাল
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শৈশব বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও পরীক্ষার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়।
১. জন্মের পর ঘটনা:
- নবীজির পিতা আবদুল্লাহ তাঁর জন্মের আগেই ইন্তেকাল করেন। ফলে তিনি পিতৃহীন অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেন।
- নবীজির মা আমিনা তাঁকে অত্যন্ত স্নেহভরে লালন-পালন করেন।
- আরবের প্রথা অনুযায়ী শিশুরা মরুভূমির বিশুদ্ধ পরিবেশে বেড়ে উঠত। নবীজিকেও দাই মা হালিমা সা’দিয়া-এর কাছে দেওয়া হয়।
২. মরুভূমিতে জীবন:
- নবীজির শৈশবের প্রথম কয়েক বছর দাই মা হালিমার কাছে কাটে।
- মরুভূমির পরিবেশে তিনি বিশুদ্ধ আরবি ভাষা শিখেন এবং শারীরিকভাবে সুগঠিত হন।
- এ সময় একটি অলৌকিক ঘটনা ঘটে: নবীজির বুক বিদীর্ণ করে ফেরেশতা জিবরাইল তাঁর হৃদয় থেকে কালো দাগ সরিয়ে তা পবিত্র করেন। এই ঘটনা নবীজির ভবিষ্যৎ নবুয়তের পূর্বাভাস দেয়।
৩. মায়ের মৃত্যু:
- ছয় বছর বয়সে নবীজির মা আমিনা ইন্তেকাল করেন।
- এর পর দাদা আবদুল মুত্তালিব তাঁকে লালন-পালন করতে থাকেন।
- দাদার মৃত্যুর পর আট বছর বয়সে চাচা আবু তালিব তাঁকে নিজের তত্ত্বাবধানে নেন।
কৈশোরকাল
১. চাচার সান্নিধ্যে বাণিজ্যিক জীবন:
- চাচা আবু তালিবের সাথে থাকাকালে নবীজি তাঁর বাণিজ্যিক কাজগুলোতে সহায়তা করতেন।
- কৈশোরে তিনি সিরিয়া পর্যন্ত চাচার সাথে বাণিজ্য কাফেলায় যান।
২. সততা ও ন্যায়পরায়ণতা:
- কৈশোর থেকেই নবীজি তাঁর সততা, ন্যায়পরায়ণতা এবং ধৈর্যের জন্য পরিচিত ছিলেন।
- মক্কার লোকজন তাঁকে আল-আমিন (বিশ্বাসযোগ্য) এবং আস-সাদিক (সত্যবাদী) উপাধিতে ভূষিত করে।
৩. সমাজের সমস্যার প্রতি সচেতনতা:
- নবীজির কৈশোরকাল ছিল সমাজের অনৈতিকতা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে গভীর চিন্তা-ভাবনার সময়।
- তিনি কখনও মূর্তিপূজা, মিথ্যা কথা বলা বা কোনো ধরনের খারাপ কাজে অংশগ্রহণ করেননি।
৪. সামাজিক কার্যক্রম:
- নবীজি হিলফুল ফুযুল নামে একটি সংগঠনে যোগ দেন। এটি ছিল একটি ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার রক্ষা করার চুক্তি, যেখানে নিপীড়িতদের সাহায্য করা হতো।
৫. ব্যক্তিত্বের গুণাবলী:
- কৈশোর থেকেই নবীজির মধ্যে ধৈর্য, সাহস, সততা এবং দানশীলতার মতো গুণাবলী দেখা যেত।
- মক্কার সমাজে তিনি ইতিমধ্যে একজন সম্মানিত ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হয়ে ওঠেন।
উপসংহার:
নবীজির শৈশব ও কৈশোর ছিল তাঁর ভবিষ্যৎ নবুয়তের ভিত্তি তৈরির সময়। এ সময়েই তাঁর চরিত্রের অনন্য বৈশিষ্ট্য, যেমন সততা, ন্যায়পরায়ণতা, এবং দয়া, বিকশিত হয়, যা পরবর্তীতে ইসলাম প্রচারের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে ওঠে।
কি ধরনের লেখা প্রয়োজন, কমেন্টে জানান ইনশা-আল্লাহ লিখে দিবো।
ReplyDelete