সুদ কত প্রকার? কি কি? লেখক- মোঃ ফিরোজ কবির।

 সুদ কত প্রকার? কি কি? 

সুদ (রিবা) ইসলামে প্রধানত দুই প্রকার হিসেবে বর্ণিত:

১. রিবা আল-ফাদল (Riba al-Fadl)

এটি সুদের প্রথম প্রকার, যা মূলত পণ্য বা সম্পদ বিনিময়ে অতিরিক্ত লাভ গ্রহণের মাধ্যমে হয়। এর মধ্যে দুটি পণ্যের মধ্যে যে কোনো একটি পণ্যের অতিরিক্ত মূল্য বা পরিমাণ গ্রহন করা হয়, যা যে ধরণের পণ্য বা সেবার প্রকৃত বিনিময়ে যোগ্য নয়।

উদাহরণ:

  • সোনা ও রূপার ক্ষেত্রে:
    যদি আপনি সোনা বা রূপা বিনিময় করেন, তবে একে অপরের সমান পরিমাণে বা সমমূল্যে বিনিময় করতে হবে। কিন্তু যদি আপনি বেশি সোনা নিয়ে কম রূপা দেন (অথবা বিপরীত), তবে এটি সুদের অন্তর্ভুক্ত হবে, কারণ আপনি অতিরিক্ত লাভ বা মূল্য গ্রহণ করছেন।
    কুরআনে সূরা আল-বাকারা (২:২৭৫) এ বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে।

২. রিবা আল-নাসিয়া (Riba al-Nasi'ah)

এটি সবচেয়ে পরিচিত এবং পরিশোধের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে, যা অর্থনৈতিক লেনদেনের সময় সুদ চালু হয়। এটি সেই সুদ যেখানে ঋণের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় এবং এর উপর নির্দিষ্ট অতিরিক্ত পরিমাণ পরিশোধ করতে বলা হয়, যা মূল ঋণের পরিমাণের অতিরিক্ত।

উদাহরণ:

  • ঋণের সুদ:
    যদি আপনি কাউকে ঋণ দেন এবং তাকে সুদ প্রদান করতে বলেন, যেমন ১০০ টাকা ধার নিয়ে, আপনি ১ মাস পর ১১০ টাকা ফিরিয়ে দিবেন, তাহলে ১০ টাকা সুদ হিসাবে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া হবে।
    এটি ইসলামে হারাম কারণ এটি একপক্ষকে অন্যপক্ষের তুলনায় অবৈধভাবে লাভবান করে।

তুলনা:

  • রিবা আল-ফাদল হল পণ্যের অমিল ও পরিমাণের কারণে সুদ, যেখানে এক ধরনের পণ্য অন্য ধরনের পণ্যের তুলনায় বেশি হয়ে যায়।
  • রিবা আল-নাসিয়া হল ঋণের উপর অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ, যা সাধারণত একটি সময় নির্ধারণের মাধ্যমে ঘটে এবং যা সুদ হিসেবে কাজ করে।

সংক্ষেপে:

সুদ দুটি প্রকারে ভাগ করা হয়:

  1. রিবা আল-ফাদল - পণ্যের বিনিময়ে অতিরিক্ত পরিমাণ গ্রহণ।
  2. রিবা আল-নাসিয়া - ঋণের উপর অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ।

এ দুটি প্রকারই ইসলামে নিষিদ্ধ এবং মুসলিমদের জন্য এটা একটি গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।

Comments

Popular posts from this blog

মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শৈশব ও কৈশোর শৈশবকাল। লেখক মোঃ ফিরোজ কবির।

বিষয়ঃ বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে রাসুল (সা:) এর আদর্শ। লেখক মোঃ ফিরোজ কবির

হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর স্ত্রীদের নামসমূহ। লেখক- মোঃ ফিরোজ কবির।