সুন্নত নামাজ কত প্রকার? রাসুল সাঃ ফরজ নামাজের পাশা-পাশি আর কি কি নামাজ আদায় করেছেন? লেখক- মোঃ ফিরোজ কবির।
সুন্নত নামাজ দুই প্রকার:
1. মুয়াক্কাদাহ সুন্নত (গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত)
এটি এমন সুন্নত যা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিয়মিত আদায় করেছেন এবং এটি ছেড়ে দেওয়ার প্রতি নিরুৎসাহিত করেছেন। যেমন:
ফজরের আগে ২ রাকাত।
জোহরের আগে ৪ রাকাত এবং পরে ২ রাকাত।
মাগরিবের পরে ২ রাকাত।
এশার পরে ২ রাকাত।
2. গাইরে মুয়াক্কাদাহ সুন্নত (কম গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত)
এটি এমন সুন্নত যা রাসূলুল্লাহ (সা.) মাঝে মাঝে আদায় করেছেন, কিন্তু নিয়মিত আদায় করেননি। যেমন:
জোহরের আগে অতিরিক্ত ২ রাকাত।
আসরের আগে ৪ রাকাত।
মাগরিবের আগে ২ রাকাত।
এশার আগে ২ রাকাত।
সুন্নত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায় এবং তা ফরজ নামাজের ঘাটতি পূরণের মাধ্যম হয়।
****রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরজ নামাজের পাশাপাশি বিভিন্ন সুন্নত নামাজ নিয়মিত বা কখনো কখনো আদায় করতেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো:
১. তাহাজ্জুদ নামাজ
এটি রাতের গভীরে আদায় করা হয়।
এটি রাসুল (সা.)-এর জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত ছিল।
আল্লাহ তাআলা কুরআনে তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য রাসুল (সা.)-কে নির্দেশ দিয়েছেন।
২. ইশরাক নামাজ
সূর্যোদয়ের ১৫-২০ মিনিট পরে ২ বা ৪ রাকাত নামাজ।
এটি রাসুল (সা.) মাঝে মাঝে আদায় করতেন।
৩. চাশতের নামাজ (দুহা নামাজ)
সকাল ১০টা থেকে দুপুরের আগে পর্যন্ত যে সময় থাকে, তখন ২ থেকে ১২ রাকাত পর্যন্ত নামাজ আদায় করা যায়।
রাসুল (সা.) এটি নিয়মিত পড়তেন।
৪. তাহিয়্যাতুল মসজিদ
মসজিদে প্রবেশ করার পর বসার আগে ২ রাকাত নামাজ।
এটি রাসুল (সা.)-এর একটি পছন্দনীয় আমল ছিল।
৫. তাহিয়্যাতুল ওজু
অজু করার পর আল্লাহর শুকরিয়া স্বরূপ ২ রাকাত নামাজ।
রাসুল (সা.) কখনো কখনো এটি আদায় করতেন।
৬. সালাতুত তাওবা
গুনাহ থেকে ক্ষমা প্রার্থনার জন্য ২ রাকাত নামাজ।
রাসুল (সা.) এটি করতে উৎসাহিত করেছেন।
৭. সালাতুল ইস্তিখারা
কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আল্লাহর নির্দেশনা পাওয়ার জন্য এই নামাজ আদায় করা হয়।
রাসুল (সা.) এটি নিজেও পড়েছেন এবং সাহাবাদেরও শিক্ষা দিয়েছেন।
৮. কুসূফ ও খুসূফ নামাজ (সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণের নামাজ)
সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হলে এটি আদায় করা হয়।
রাসুল (সা.) এ সময় ২ রাকাত নামাজ পড়েছেন।
৯. সালাতুল ঈদ
ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিনে আদায় করা নামাজ।
এটি রাসুল (সা.) ও সাহাবারা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পালন করতেন।
১০. জানাজার নামাজ
মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া ও মাগফিরাত কামনার উদ্দেশ্যে পড়া হয়।
এটি রাসুল (সা.) নিয়মিত আদায় করেছেন।
এসব সুন্নত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয় এবং জীবন পূণ্যময় হয়ে ওঠে।
Comments
Post a Comment